ব্যাপ্যতা শব্দের অর্থ:
তর্কবিদ্যায় ব্যাপ্যতা বলতে বোঝায় কোনো পদের ব্যাপ্যতা। ব্যাপ্যতা শব্দটির অর্থ হল, কোনো একটি পদ ব্যাপ্য (distributed) অথবা অব্যাপ্য (undistributed)। অর্থাৎ ব্যাপ্যতা–ব্যাপ্য অথবা অব্যপ্য। যে-কোনো নিরপেক্ষ বচনে দুটি পদ থাকে। এই দুটি পদের একটি হল উদ্দেশ্য পদ (subject term) এবং অপরটি হল বিধেয় পদ (predicate term)। এই পদ দুটি ব্যাপ্যও হতে পারে আবার অব্যাপ্যও হতে পারে।
পদের ব্যাপ্য হওয়ার লক্ষণ:
একটি পদ একমাত্র তখনই ব্যাপ্য বলে বিবেচিত হবে যখনই সেই পদটির মাধ্যমে তার সম্পূর্ণ পরিমাণকে (ব্যক্তৰ্থকে) উল্লেখ করা যায় অর্থাৎ, কোনো পদের মাধ্যমে যদি তার সম্পূর্ণ ব্যক্তৰ্থকে (denotation) নির্দেশ করা যায়, তাহলে বলতে হবে যে পদটি ব্যাপ্য (distributed)। সুতরাং কোনো পদের ব্যাপ্যতার ক্ষেত্রে সেই পদ দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণি বা জাতির পরিপূর্ণ পরিমাণকে তথা সমস্ত সদস্যকে নির্দেশ করা হয়েছে কি না তা দেখা হয়।এক্ষেত্রে যদি দেখা যায় যে, পদটির পরিপূর্ণ ব্যক্তর্থ বা পরিমাণ কে নির্দেশ করা হয়েছে, তবে মেনে নিতে হয় যে পদটি ব্যাপ্য হয়েছে।
উদাহরণ: সকল মানুষ হয় মরণশীল - A বচন
ব্যাখ্যা: এই বচন টিতে দেখা যায় যে, উদ্দেশ্য পদ তথা মানুষ নামক পদটি তার পরিপূর্ণ ব্যক্তর্থ তথা পরিমাণ কে নির্দেশ করতে সমর্থ বলে এই পদটি ব্যাপ্য।
পদের অব্যাপ্য হওয়ার লক্ষণ:
কোনো পদ একমাত্র তখনই অব্যাপ্য বলে বিবেচিত হবে, যখনই সেই পদটির মাধ্যমে তার সম্পূর্ণ ব্যর্থ তথা পরিমাণকে উল্লেখ না করে, তার আংশিক পরিমাণকে উল্লেখ করতে সমর্থ হয় অর্থাৎ, পদের অব্যাপ্যতার অর্থ হল সেই পদ দ্বারা নির্দেশিত পরিপূর্ণ পরিমাণকে উল্লেখ করতে না পারা। এক্ষেত্রে তাই শুধুমাত্র পদের আংশিক পরিমাণের উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
উদাহরণ:কোনো কোনো মানুষ হয় মরণশীল।I বচন
ব্যাখ্যা:এই বচনটিতে দেখা যায় যে, উদ্দেশ্য পদ তথা মানুষ তার পরিপূর্ণ ব্যক্তর্থ বা পরিমাণকে উল্লেখ করতে সমর্থ নয় বলে তা ব্যাপ্য নয়, তা হল অব্যাপ্য। আবার মরণশীল নামক বিধেয় পদটিও পরিপূর্ণ পরিমাণকে নির্দেশ করতে সমর্থ নয় বলে তাও অব্যাপ্য রূপে গণ্য কারণ, মানুষ ছাড়াও আরও জীব আছে যারা মরণশীল। সুতরাং দেখা যায় যে, এরূপ বচনটিতে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদ দুটিই অব্যাপ্য।
0 Comments:
Post a Comment
Write Your thinking 🤔